কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে খুলনা বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন সহ কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এক মতবিনিময় সভা গত ১৩ মার্চ রাত ৭ টায় খুলনা সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুস সামাদ এতে সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেন এমপি বলেন, লবনাক্ততা ও উচ্চ তাপমাত্রা সহিষ্ণু প্রজাতীর শস্য উদ্ভাবন করে চাষ বাড়াতে স্থানীয় কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করতে কৃষি বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসতে হবে । মাটির প্রকৃতি ও পরিবেশ অনুযায়ী যে এলাকায় যে ফসল চাষ করলে প্রকৃতির বিরুপ প্রভাব পড়বে না সেই এলাকায় সে প্রজাতীর ফসল চাষ করতে আহবান জানান তিনি। এর আগে গত ১২ মার্চ কমিটি যশোরের ঝিকরগাছায় গদখালীতে ফুল চাষ, প্যাকেজিং ও বাজারজাতকরন এবং সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জসহ আইলা দুর্গত এলাকায় কৃষি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। ১৩ মার্চ সকালে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের আমবাড়িয়ায় ডিএই’র বাস্তবায়নাধীন সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের গৃহীত কার্যক্রম পরিদর্শন ও উপকূলীয় সুন্দরবনের লবনাক্ত এলাকায় ভবিষ্যৎ কৃষির অভিযোজন কৌশল প্রনয়নের সম্ভাব্যতা পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়া কমিটি খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় কৃষির বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ এবং আড়ংঘাটার ওপসি সরেজমিনে দেখাশোনা করেন। কমিটি মত বিনিময় সভায় এ অঞ্চলের কৃষি সমস্যার সমাধানে কি কি করনীয় সে বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাগণ জানান, লবনাক্ততার সমস্যার জন্য উপজেলা পর্যায়ে সকল সরকারী পুকুর ও লেকে মিষ্টি পানি ধরে রেখে তা সেচ কার্যে ব্যবহার করলে সেচের পানির সমস্যার সমাধান সম্ভব। সময় ভিত্তিক চাষাবাদ ও বাই প্রোডাক্ট তৈরি করে মৌসুমী ফল ও সব্জী সংরক্ষন করে তা ২-৩ মাস ব্যবহার করে লাভবান হতে পারে। এ ছাড়া ঝিকরগাছার গদখালীতে ফুল গবেষনা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সম্ভাবনাময় ফুল চাষের দিগন্ত আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে কমিটির নিকট প্রস্তাব করেন। নদ নদীর পানি লবনাক্ততা কমানোর জন্য কপোতাক্ষের উজানে মাথাভাঙ্গা নদী খননের ব্যবস্থা করলে তা সেচ কাজে ব্যবহার উপযোগী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন । মতবিনিময় সভার স্বাগত বক্ত্যবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল লতিফ এ অঞ্চলের গত ১০ বছর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কৃষির সার্বিক উন্নতি বর্ননা করেন। তিনি বলেন বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারনে খুলনা জেলায় গত ১০-১১ অর্থবছরে ৯৬ লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি থেকে বর্তমানে ২০১৬ সালে ১৬ লক্ষ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত্বে পরিনত হয়েছে। এ অঞ্চলের লবনাক্ত জমিতে তিল, সূর্যমূখীসহ তরমুজ, সফেদা চাষের সম্ভাবনার দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন বর্তমানে ভিয়েতনামী নারকেল চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে । তিনি সরকারের প্রযুক্তি নির্ভর যুগপযোগী কৃষিনীতির কারনে এ সব উন্নতি সম্বব হচ্ছে বলে জানান। মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মান্নান এমপি মো. মামুনুর রশিদ কিরন এমপি, নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, একেএম রেজাউল করিম তানসেন এমপি ও মো. নুরুল ইসলাম ওমর এমপি। অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদি সুজা এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য (পিরোজপুর ) অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম ও কৃষি মন্ত্রানালয়ের যগ্ম সচিব মো. হেমায়েত উদ্দিন প্রমুখ ।